নাটক, যা পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখার কথা বলে

 

গ্রাউন্ডজিরো, এপ্রিল, ২০১৮

‘স্বভাব’ দলের নতুন নাটক ‘রাখে নদী মারে কে’-র প্রথম শো হয়ে গেল গত ২২-শে এপ্রিল, বসুন্ধরা দিবসে, সায়েন্স সিটির ন্যানোল্যাব পরিচালিত এক অনুষ্ঠানে। আয়োজকরা ছাড়াও ছিলেন সত্তর-আশিজন বিভিন্ন স্কুলের নানা ক্লাসের ছাত্রছাত্রী আর তাঁদের মা-বাবারা। দর্শকরা গল্পের কতখানি ভিতরে ঢুকে যেতে পারছিলেন, তা বোঝা গেল শুধু অভিনয়ের তালে তাল মিলিয়ে হাসি, গানের সাথে মাথা দোলানো, বা শেষের হাততালি থেকেই নয়; আলাদা ভাবে অনেকেই এসে জানালেন তাঁদের ভাল লাগার কথা। ব্যক্তিগত পরিসরে আলোচনা হল, কীভাবে জ্ঞান দেবার ঢঙে নয়, কথকতার ঢঙে এই নাটক নদীর জলের রাজনীতি ও অর্থনীতি, ব্যবহার ও অপব্যবহার নিয়ে কথা বলছে, পরিবেশ ও সমাজের উন্নয়নের নামে ‘প্ল্যানিং’-এর খাঁটি-গলদ বিচার নিয়ে তথ্য তুলে ধরছে – এমন তথ্য, যা স্কুলের পরিবেশ-বিজ্ঞান বইতে পাওয়া যায় না, অথচ যা আমাদের দেশজ জ্ঞানভাণ্ডারের ফসল, সত্যিকারের মানবতাবাদী ব্যবহারিক বিজ্ঞান।

নাটকের গল্প এক নদীকে নিয়ে। নদীর নাম শিবনাথ। বোতলবন্দী করে এ দেশের নদীর জলকে ‘পানীয়’ বানাবার ইতিহাসে একদম গোড়ার দিকে সত্যিই নাম পাওয়া যায় এই নদীটির। তো সেই নদীকে পাইপলাইনে বেঁধে, তার জলকে সব মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার নামে ব্যবসার কুচক্রী পরিকল্পনা করা হয় এই নাটকে। কীভাবে ঠেকানো যাবে এই ‘হাই-টেকনিক স্কীম’? কারা ঠেকাবে? আদৌ ঠেকানো যাবে কী? যায় কখনও? পৃথিবীর কোণে-কোণে নির্লজ্জ থাবা বাড়িয়ে যারা পরিবেশের সর্বনাশ করে, আমজনতার-চাষির-শ্রমিকের বাঁচা-মরা-চাওয়া-পাওয়া নিয়ে রাজনীতি করে, আর্থিক-যান্ত্রিক-বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের কুমীরছানা দেখিয়ে নিজেদের পেট-পকেট ভারি করে, তেমনই এক ঠাকুরমার ঝুলির ধূর্ত ভুঁড়ো শিয়ালের মত দুর্দান্ত এই গল্পের ‘ভিলেন’।

Continue reading